এই এক সাবজেক্ট ফেল রেজাল্ট মেয়েটার গোটা জীবনটাকেই বদলে দিল। পড়া শুনার পাঠ চুকিয়ে মেয়েটার গন্তব্য হলো রান্না ঘর;এখন থেকে পড়াশুনা বন্ধ। ফেল করা মেয়েদের সেকেন্ড চান্স বলে কিছু নেই;ছেলে হলে হয়তো উপার্জনের কথা মাথা রেখে বার বার চান্স দেওয়া যেতো।
পড়াশুনা যখন হলো না তখন ঘরের কাজ কর্ম;রান্না বান্না শিখুক;এতে বিয়েটা অন্তত ঠিক ঠাক ভাবে দেওয়া যাবে।
পরিবারের কেউ তেমন ভালো করে তার সাথে কথা বলে না;ড্রইং রুমে টিভির রিমোট যখন মেয়েটার হাতে থাকতো তখন বড় ভাই চেচিয়ে বলত "অই ফেল্লো;যা এক কাপ চা নিয়ে আয়
;পড়াশুনা না করে সব সময় টিভি দেখতি বলেই তো ঘোড়ার ডিমটা খেয়েছিস"
ছোট বোনটাকে কোন পড়া বুঝিয়ে দিতে গেলে সে ফিক করে হেসে বলতো "তুই তো ফেল করেছিস;আমাকে পড়া বুঝিতে দিতে পারবি?হি হি"
😀
বাবা তো মেয়েটার সাথে কথা বলায় বন্ধ করে দিয়েছিল।
তবুও একদিন তরকারিতে লবল বেশি হয়েছিল বলেই ধমকে বলেছিল "একটা কাজও কি তোকে দিয়ে হবে না?না হয়েছে পড়াশুনা;না হচ্ছে রান্নাবান্না;কোন গুন না থাকলে তোকে পাড়ার কাণা ল্যাংড়া বুড়োটাও বিয়ে করতে রাজি হবে না'।
সেই দিন মেয়েটা শেষ বারের মতো কেঁদেছিল;দরজা বন্ধ করে হু হু করে কেঁদেছিল;সেই কান্না কেউ দেখে নি;সেই বন্ধ দরজাটাও আর সে খুলে নি;
পরের দিন সকালে সবাই যখন রুমের দরজা ভেজ্ঞে তার ঘরে ডুকলো ততক্ষনে যে বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছিল।মেয়েটা সিলিং ফ্যানে উড়না পেচিয়ে ঝুলে পড়েছে।
এইটা একটি কাল্পনিক ঘটনা;তবে এই সব ঘটনা সবার আড়ালে নীরবে নিভৃতে ঘটছে বলেই পত্রিকায় হেডলাইন হয়" পরীক্ষায় পাশ করতে না পারায় কিশোরীর আত্নহত্যা"।
অসময়ে সব কিছু হারিয়ে আফসোস করার চেয়ে; ঠিক সময়ে একটু সতর্ক হলে হয়তো সব কিছু হারাতে হতো না;
খারাপ রেজাল্টে সন্তানকে ধিক্কার না দিয়ে যদি তাকে নতুন করে উতসাহ দেওয়া যেতো;যদি পরিবারের সবাই বন্ধু হয়ে তার কষ্টের ভাগ নেওয়া যেতো;তাহলে হয়তো ঘটনার চিত্রটাই ঘুরিতে দেওয়া যেতো।
রেজাল্টের জন্য যদি সন্তানকে হারাতে হয় তবে সেই সন্তানের গোল্ডেন রেজাল্ট আপনার কি কাজে আসবে?